ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে সড়কে তল্লাশির সময় প্রবাস ফেরত সাবেক ছাত্রলীগ নেতার কাছ থেকে সাড়ে নয় হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার হয়। ভুক্তভোগী কিবরিয়া হাসান পাঠান জানান, সোমবার সকালে তিনি ব্যক্তিগত কাজে আখাউড়া স্থলবন্দরে যাচ্ছিলেন।
পথিমধ্যে তার রিকশা থামিয়ে তল্লাশি শুরু করে আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মো. মোবারক আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ। এক পর্যায়ে তার পকেটে থাকা সাড়ে নয় হাজার টাকাসহ বিভিন্ন কাগজপত্র রিকশার সিটে রাখা হয়। একটি দুই টাকার নোট ভাজ রাখা দেখে এটা দিয়ে ইয়াবা সেবন করা হয় বলে অভিযোগ আনা হয়। পুলিশের এ তল্লাশির সময় দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার মো. হান্নান যাওয়ার সময় তাকে ডেকে আনেন তিনি।
এরই মধ্যে সজিব নামে এক পুলিশ সদস্য সাড়ে নয় হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। হান্নানের মধ্যস্থতায় তিনি তখন ছাড়া পান। কিবরিয়া আরো জানান, ফিরে এসে বিষয়টি আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজলকে জানান। তাকজিল খলিফা বিষয়টি নিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) সঙ্গে কথা বলেন। বিকেলে তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা আব্দুল মমিন বাবুল, আবু কাউছার ভূঁইয়া ও মনির হোসেনের মধ্যস্থতায় পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দেয় পুলিশ। থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলামের কক্ষে বসে বিষয়টির মীমাংসা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাবেক ইউপি মেম্বার মো. হান্নান বলেন, ‘তল্লাশির সময় কিবরিয়া আমাকে ডাকতে থাকে। আমি সেখানে গিয়ে তাৎতক্ষনিকভাবে কিবরিয়া ছাড়িয়ে দেই। পরে জানতে পারি পুলিশ টাকা নিয়ে গেছে। বিকেলে বিসয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। যুবলীগ নেতা আবু কাউছার ভূইয়া বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সাড়ে নয় হাজার টাকাই ফেরত দিবে বলা হয়েছিলো। কিন্তু আলোচনার সময় পুলিশ বারবার বলছিলো কিবরিয়ার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় পুলিশের সম্মানের কথা চিন্তা করে কিবরিয়ার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মোবারক আলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌণে ছয়টার দিকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে মোবারক আলী প্রথমে এ প্রতিবেদক কোথায় আছেন জানতে চান। ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আছি’ বলায় একটি ফোন আসছে বলে লাইন কেটে দেন।
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলামের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
পরে দেখা হলে বিস্তারিত বললে তিনি জানান, একটি ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিলো। সেটির সমাধান হয়েছে। পুলিশের দোষের বিষয়টি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘সব দোষ তো আমাদেরই হয়।’